হানি ট্র্যাপে পড়ে কি ২.৬৩ লক্ষ টাকা খুইয়েছেন এক সিআরপিএফ জওয়ান? সোশ্যাল মিডিয়ার ফাঁদে এক বাস্তব ঘটনার চাঞ্চল্যকর উন্মোচন!
A shocking honeytrap cybercrime in Manipur where a CRPF jawan lost ₹2.63 lakh after being blackmailed via WhatsApp video call. Bengali news coverage.

কীভাবে একটা ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট বদলে দিল জীবন? ফাঁদে পড়ে সিআরপিএফ জওয়ানের ২.৬৩ লক্ষ টাকা খোয়া গেল!
ইম্ফল, মণিপুর (জুন ২০২৫):
একটি ফেসবুক ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট, তারপর একটি ভিডিও কল — আর ঠিক তার পরেই শুরু হলো ব্ল্যাকমেল, ভয় আর অর্থনৈতিক ক্ষতির এক ধারাবাহিক চিত্র।
সিআরপিএফের (উদাহরণস্বরূপ নাম ধরুন ‘সিপাহী অমিত’) এক সদস্য এই ‘হানি ট্র্যাপ’ ফাঁদে পড়ে ২ লক্ষ ৬৩ হাজার টাকারও বেশি অর্থ হারান।
কীভাবে ঘটনার সূত্রপাত?
২০২৫ সালের ২৮শে মে, এক অজ্ঞাতপরিচয় মহিলা যিনি নিজেকে “অনিতা শর্মা” নামে পরিচয় দেন, ফেসবুকে সিপাহী অমিত-কে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠান (অ্যাকাউন্ট নম্বর: 115096456)।
ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট অ্যাকসেপ্ট করার কিছুক্ষণের মধ্যেই ওই মহিলা WhatsApp নম্বর (8448423853) শেয়ার করার অনুরোধ করেন।
পরদিন রাতে, ২৯শে মে রাত ১০:৩৩ থেকে ১১:০৬ পর্যন্ত WhatsApp-এ প্রথম ভিডিও কল হয়।
৩০শে মে দ্বিতীয় ভিডিও কলের সময়, ওই মহিলা নগ্ন অবস্থায় দেখা দেন, যা সম্ভবত গোপনে রেকর্ড করা হয়।
ব্ল্যাকমেল ও অর্থনৈতিক শোষণ
৩রা জুন দুপুর ১:৪৫ মিনিটে, অমিতের মোবাইলে একটি ফোন আসে যেখানে ফোনকারী নিজেকে "দিল্লি সাইবার ক্রাইম ব্রাঞ্চ" এর অফিসার বলে দাবি করে।
সে জানায় যে, “আপনার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়া হবে যদি টাকা না দেন।”
এরপর অমিত-কে বলা হয় যে, তিনি ফোন করুন 8423151791 নম্বরে।
অমিত ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে প্রথমে ₹৩৫,৫০০ টাকা পাঠান BHIM অ্যাপের মাধ্যমে 9703286944 নম্বরে।
প্রতারণা চলতে থাকে – ১৫ বার লেনদেন, মোট ক্ষতি ₹২.৬৩ লক্ষ
প্রথম ট্রান্সফারের কিছুক্ষণের মধ্যেই আবার ফোন আসে এবং বলা হয় যে, “আরও ভিডিও আছে, সেগুলো ডিলিট করতে হলে আবার টাকা দিতে হবে।”
এইভাবে অমিত মোট ১৫টি ট্রান্সঅ্যাকশন-এর মাধ্যমে ₹2,63,200/- টাকা পাঠান।
৪ঠা জুন সকাল ৮:১৮ মিনিটে আবার সেই অজানা ব্যক্তি ফোন করে, আরও টাকা দাবি করে।
কিন্তু এবার অমিত আর ফোন ধরেননি এবং অজানা ব্যক্তির ৮টি পরবর্তী ফোন কলে সাড়া দেননি।
সাহসিকতা ও পুলিশের দ্বারস্থ হওয়া
অবশেষে, ৫ই জুন ২০২৫ তারিখে, সিপাহী অমিত সাইবার ক্রাইম থানার কাছে অভিযোগ দায়ের করেন।
তার জিডি নাম্বার ছিল - 06/CCPS/2025 এবং Acknowledgement Number - 32006250000415।
এটা তার সাহসিকতার পরিচয়, কারণ বেশিরভাগ ভুক্তভোগী অপমান বা লজ্জার ভয়ে নীরব থাকেন।
কী শেখা যায় এই ঘটনার থেকে?
-
ফেসবুক বা হোয়াটসঅ্যাপে অজানা কাউকে সহজে বিশ্বাস করা উচিত নয়।
-
ব্যক্তিগত ভিডিও কলের সময় সতর্ক থাকা দরকার।
-
যদি কেউ ব্ল্যাকমেল করে, তবে ভয় না পেয়ে তা সাইবার থানায় রিপোর্ট করতে হবে।
-
সেনাবাহিনী ও নিরাপত্তা সংস্থার সদস্যদের জন্য এটা আরও গুরুত্বপূর্ণ, কারণ তারা দেশের নিরাপত্তার সাথে জড়িত।
কীভাবে রোধ করা যাবে এই ধরনের হানি ট্র্যাপ?
-
ডিজিটাল সচেতনতা কর্মসূচি – সমস্ত বাহিনীর সদস্যদের নিয়মিত সাইবার সিকিউরিটি প্রশিক্ষণ দেওয়া।
-
সোশ্যাল মিডিয়া নীতিমালা – সেনা ও সরকারি কর্মীদের জন্য সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারে স্পষ্ট গাইডলাইন।
-
হেল্পলাইন নম্বর – বিশেষ সাইবার হেল্পলাইন যেখান থেকে দ্রুত সাহায্য পাওয়া যায়।
-
ঘটনার শেয়ারিং – এমন ঘটনা গোপন না রেখে, অন্যদের শিক্ষার জন্য শেয়ার করা।
এই ঘটনার গুরুত্ব কেন?
এই ঘটনা দেখিয়ে দিল, এক সশস্ত্র জওয়ানও সাইবার জালে পড়ে যেতে পারেন।
এটা শুধুমাত্র তার নয়, আমাদের সকলের জন্য সতর্কতার বার্তা।
What's Your Reaction?






