মোবাইল আবিষ্কার করেই মোবাইল থেকে দূরে মার্টিন কুপার? জীবনের আসল মজা কোথায়!

Martin Cooper, the inventor of the mobile phone, advises people to reduce smartphone usage and enjoy life more.

May 18, 2025 - 16:10
 0  2
মোবাইল আবিষ্কার করেই মোবাইল থেকে দূরে মার্টিন কুপার? জীবনের আসল মজা কোথায়!
Martin Cooper holding the first mobile phone, Motorola DynaTAC 8000X

বেসিক পরিচিতি ও মোবাইল আবিষ্কারের ইতিহাস:

বিশ্ব আজ যাকে ছাড়া এক মুহূর্ত কল্পনা করা যায় না, সেই মোবাইল ফোনের আবিষ্কারক তিনি — মার্টিন কুপার।
১৯৭৩ সালের ৩ এপ্রিল, এক ঐতিহাসিক দিনে প্রথম বারের মতো বিশ্ববাসী জানতে পারল "ওয়্যারলেস ফোন" নামে এক আশ্চর্য প্রযুক্তির কথা।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরের এই উদ্ভাবক মটোরোলার হয়ে তৈরি করেন বিশ্বের প্রথম মোবাইল ফোন - Motorola DynaTAC 8000X

ওই সময়ের মোবাইল ফোনটির ওজন ছিল প্রায় ২.৫ পাউন্ড (প্রায় ১.১ কেজি) ও লম্বায় ১০ ইঞ্চি। একবার চার্জ দিলে সর্বোচ্চ ২৫ মিনিট কথা বলা যেত এবং সেটিকে সম্পূর্ণ চার্জ হতে ১০ ঘণ্টা সময় লাগত।

তবে আশ্চর্যজনক হলেও সত্য, সেই মোবাইল ফোনের জনক আজকের দিনে স্মার্টফোন ব্যবহার করেন দিনে মাত্র ৫ শতাংশ সময়েরও কম


প্রযুক্তির জনক মার্টিন কুপারের বার্তা: "জীবন উপভোগ করুন, ফোন সরিয়ে রাখুন!"

সাম্প্রতিক সময়ে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম BBC-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মার্টিন কুপার বলেন,

"আমি দিনে পাঁচ শতাংশেরও কম সময় মোবাইল ব্যবহার করি। যারা সারাদিন মোবাইলে মুখ গুঁজে থাকেন, তারা যেন বুঝতে শেখেন - আসল জীবনটা ফোনের বাইরেই।"

তিনি আরও বলেন, “আমার শুরু থেকেই লক্ষ্য ছিল, ফোন হবে ব্যক্তিগত যোগাযোগের মাধ্যম। কেউ যাতে একটা নির্দিষ্ট জায়গায় নয়, বরং একটি নির্দিষ্ট মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন।”

তার মতে, আজকের প্রজন্ম মোবাইলের অতিরিক্ত ব্যবহারে নিজেদের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তগুলো হারিয়ে ফেলছে।
সোশ্যাল মিডিয়া, রিলস, ননস্টপ স্ক্রলিং - সবই যেন আমাদের জীবনের ‘প্রকৃত স্বাদ’ কেড়ে নিচ্ছে।


মোবাইলের অগ্রযাত্রা: যেখান থেকে শুরু, আজ যেখানে দাঁড়িয়ে

  • ১৯৭৩: প্রথম ওয়্যারলেস মোবাইল ফোন তৈরি

  • ১৯৮৩: Motorola DynaTAC 8000X বাজারে মুক্তি পায়

  • ১৯৯০-এর দশক: ছোট আকার, এসএমএস, রিংটোন

  • ২০০৭: স্মার্টফোন যুগের সূচনা, iPhone বাজারে আসে

  • ২০২০-এর পর: মোবাইল হয়ে ওঠে দৈনন্দিন জীবনের অপরিহার্য অংশ

এই দীর্ঘ যাত্রায় মোবাইল শুধু ফোনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকেনি। এটি আজ আমাদের মানসিক অবলম্বন, তথ্যের ভাণ্ডার এবং বিনোদনের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে দাঁড়িয়েছে।

কিন্তু এত প্রযুক্তিগত উৎকর্ষের মাঝেও মোবাইল ফোনের স্রষ্টা আমাদের স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন — “অতিরিক্ত মোবাইল ব্যবহারে জীবন নয়, সময়ই হারিয়ে যায়।”


জনগণের প্রতিক্রিয়া ও সমসাময়িক প্রাসঙ্গিকতা:

মার্টিন কুপারের বক্তব্য সামনে আসতেই বহু মানুষ সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজেদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। কেউ লিখেছেন,

“একজন প্রযুক্তির জনক যদি বলেন ফোন সরাও, তাহলে আমাদের বোঝা উচিত আমরা কোথায় যাচ্ছি।”

অন্য কেউ বলেছেন,

“মোবাইল আমাদের প্রয়োজন, তবে আমরা যেন তার দাস না হয়ে যাই।”

বর্তমানে বিশ্বজুড়ে ‘ডিজিটাল ডিটক্স (Digital Detox)’ আন্দোলন জোরদার হচ্ছে। বহু মনোবিদ এবং গবেষকও মোবাইল আসক্তিকে মানসিক স্বাস্থ্য হ্রাসের মূল কারণ হিসেবে দেখছেন।


এই বার্তায় আমাদের শেখার কী আছে?

  • দিনে অন্তত ১ ঘণ্টা ফোন ছাড়া কাটান

  • পরিবার ও প্রকৃতির সঙ্গে সময় কাটান

  • প্রতিদিন মোবাইল ব্যবহারের সময় ট্র্যাক করুন

  • ঘুমের আগে মোবাইল ব্যবহার বন্ধ করুন

মার্টিন কুপারের এই সতর্কবার্তা শুধুই প্রযুক্তি ব্যবহারের বিরুদ্ধে নয়, বরং জীবনের আসল স্বাদ উপভোগের আহ্বান।


বিশ্বজোড়া সম্মান ও কৃতিত্ব:

  • "Prince of Asturias Award" (2009): মোবাইল ফোন আবিষ্কারের জন্য

  • Wireless Hall of Fame: অন্তর্ভুক্তি

  • National Academy of Engineering Membership

  • Time Magazine’s 100 Most Influential People লিস্টেও জায়গা পেয়েছেন


শেষ কথা:

মোবাইল আবিষ্কার করেছিলেন মানুষকে আরও কাছাকাছি আনার জন্য, কিন্তু অতিরিক্ত ব্যবহার মানুষকে একাকীত্বের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
আজও, মোবাইল ফোনের সেই স্রষ্টা নিজেই সেটি থেকে দূরে থাকার শিক্ষা দিচ্ছেন। আমরা কি তাঁর সেই শিক্ষাকে গ্রহণ করব?


আপনাদের কী মত?

আপনিও কি দিনে ৫ ঘণ্টা বা তার বেশি সময় মোবাইলে কাটান? আপনার জীবনেও কি মোবাইল অনেকখানি দখল করে নিয়েছে?

নিচে কমেন্ট করে জানান আপনার মতামত।
এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ ও মন ছুঁয়ে যাওয়া খবর পেতে প্রতিদিন ভিজিট করুন আমাদের ওয়েবসাইট NewsHobe.com

আমরা থাকব আপনাদের পাশে — তথ্য, জ্ঞান ও বাস্তবের সংযোগে।

What's Your Reaction?

Like Like 0
Dislike Dislike 0
Love Love 0
Funny Funny 0
Angry Angry 0
Sad Sad 0
Wow Wow 0
Newshobe "हमारा उद्देश्य ताज़ा और प्रासंगिक खबरें देना है, ताकि आप देश-दुनिया के हर महत्वपूर्ण घटनाक्रम से जुड़े रहें। हमारे पास अनुभवी रिपोर्टरों की एक टीम है, जो खबरों की गहराई से रिपोर्टिंग करती है।"